Bangla Tribune News Details

back

চলতি বছরই ন্যাশনাল ডেমো ডে আয়োজন করতে চায় সরকারের আইসিটি বিভাগ। সেই বিশেষ দিবসে সারা বছর প্রযুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে বের হয়ে আসা নানা সেবা পণ্যের নমুনা সংস্করণের প্রদর্শনী হবে। সেই প্রদর্শনী থেকে বেছে নেওয়া হবে সেরাগুলো যা মানুষের প্রয়োজন ও সেবা মেটাতে সক্ষম।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজারের বেসিস মিলনায়তনে স্পেস অ্যাপস প্রজেক্ট অ্যাক্সিলারেটর শীর্ষক কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে আয়োজিত এক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ন্যাশনাল ডেমো ডেতে ইনোভেশন ফান্ড, কানেক্টিং স্টার্টআপ, এক হাজার উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলোকেও আমরা এই বিশেষ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে পারি।

পলক আরও বলেন, আমরা ‘টেন প্লাস টেন প্লাস টেন’ নামের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি যেখানে টপ টেন প্রযুক্তি আসবে এক হাজার উদ্ভাবনী প্রকল্প থেকে। থাকবে মধ্যম সারির ১০ উদ্যোগ এবং আরও থাকবে টপ টেন স্টার্টআপ ।এটা হবে একটা বিশেষ প্রকল্প।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমাদের দেশের তরুণরা ইতোমধ্যে ভালো করছে। বেসিস ও স্পেস অ্যাপস বাংলাদেশের এই উদ্যোগ অনেক ভালো প্রকল্প তুলে আনবে বলে আশা করি। আইসিটি বিভাগ এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেবে। তিনি জানান, এই প্রোগ্রামের ভালো প্রকল্পগুলোকে আইসিটি বিভাগের কানেক্টিং স্টার্টআপ, ইনোভেশন প্রজেক্টসহ বিভিন্ন প্রকল্প সহায়তায় যুক্ত করা হবে। শুধু নাসার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়া নয়, বিশ্বজয়ী অ্যাপস, সফটওয়্যার বাংলাদেশেই তৈরি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি ঘোষণা দেন, নাসা অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার টপ ২-৩ জনকে আইসিটি বিভাগ ইনোভেশন ফান্ড থেকে অনুদান তেবে।

পলক আরও জানান, জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কসহ দেশের সব হাইটেক পার্কে স্টার্টআপদের জন্য একটি করে ফ্লোর বরাদ্দ দেওয়া হবে যেখানে তারা কমমূল্যে স্পেস পায়।  

প্রসঙ্গত, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আয়োজনে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের সর্ববৃহৎ হ্যাকাথন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ। প্রতিযোগিতায় সারাবিশ্ব থেকে কয়েক হাজার মহাকাশ বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা অংশ নেন। সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনার অভাবে প্রতিযোগীদের সম্ভাবনাময় প্রজেক্টগুলো যেন অসম্পূর্ণ না থাকে, সেই লক্ষ্যে স্পেস অ্যাপস প্রজেক্ট অ্যাক্সিলারেটর শীর্ষক কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে এই কার্যক্রমের যৌথ আয়োজক বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) ও স্পেস অ্যাপস বাংলাদেশ।

বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এই কার্যক্রমের অ্যাকাডেমি পার্টনার ও ড্যাফোডিল গ্রুপের চেয়ারম্যান সবুর খান, বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্পেস অ্যাপস বাংলাদেশের প্রধান আরিফুল হাসান অপু।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, হাই স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আমাদের কাজ শেষ হয়ে যায়নি। আমরা এবার প্রাথমিকে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা শুরু করব। ফলে প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা একেবারে ছোটবেলা থেকেই প্রোগ্রামিং সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে বড় হয়ে উঠবে।

শামীম আহসান বলেন, আমাদের তরুণরা নাসাসহ বিশ্বের বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এ ধরণের উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের সম্পৃক্ততা আরও বাড়বে। দেশে এমন উদ্যোগ তৈরি হবে যা শুধু বাংলাদেশেই নয়, ফেসবুক-গুগলের মতো সারাবিশ্বে সাড়া ফেলবে।

আরিফুল হাসান অপু জানান, স্পেস অ্যাপস প্রজেক্ট অ্যাক্সিলারেটর শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় প্রাথমিকভাবে সারাদেশ থেকে সেরা চারটি দল নির্বাচন করে তাদের গবেষণাগার, মেন্টরিং, প্রকল্পের ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়াসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করা হবে। প্রাথমিকভাবে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অত্যাধুনিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। পরবর্তীতে সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে। যারা এই কার্যক্রমে তাদের প্রকল্প যুক্ত করতে আগ্রহী তাদেরকে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে স্পেস অ্যাপস বাংলাদেশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (http://spaceappsbd.org/) থেকে নিবন্ধন করতে হবে।

এই আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে স্টুডেন্ট ইনোভেশন ফোরাম। এছাড়া প্লাটিনাম পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গোল্ড পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে প্রিজম ইআরপি এবং অ্যাকাডেমিক পার্টনার হিসেবে রয়েছে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।