Prothom Alo News Details

back

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসেছেন আলী লিওয়েলিন। কাজ করেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসায়। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস অ্যাপস প্রতিযোগিতার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠক তিনি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া নাসা স্পেস অ্যাপস প্রতিযোগিতা প্রত্যক্ষ করতে এসেছেন আলী। বেসিস কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, বাংলাদেশি তরুণ শিক্ষার্থীদের সক্ষমতায় মুগ্ধ হয়েছেন তিনি।

আলী বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসে আমার দারুণ লাগছে। আমি মুগ্ধ। চতুর্থ আন্তর্জাতিক অ্যাপস চ্যালেঞ্জের জন্য এখানে আসা। এখানকার যে টিম তারা দারুণ কাজ করেছে। আমি খুব রোমাঞ্চিত যে তারা মজার মজার সব প্রকল্প নিয়ে কাজ করেছে, দারুণভাবে সুগঠিত ও নিয়ম মেনে কাজ করেছে।’

আলী আরও বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে যে বিষয়টি ভালো লেগেছে তা হচ্ছে, বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে আবেগ, রোমাঞ্চ যে শক্তি কাজ করেছে সেটা। তাদের সক্ষমতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আগামী বছর তারা আরও ভালো করবে সে কামনা করছি।’
সাক্ষাৎকারের আগে বাংলাদেশের মোবাইল অ্যাপস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশংসা করেন আলী। রেভারি ল্যাব মিমোসার বৈশাখী ফটো কনটেস্টের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও হাজির হন তিনি।

সেখানে বাংলাদেশি ‘অ্যাপস হাউ টু ওয়্যার আ শাড়ি’ সম্পর্কে বলেন, ‘আমি শাড়ি পরার মতো বিষয়ের অ্যাপ তৈরি দেখে মুগ্ধ। আমি নিজেও এই অ্যাপ দেখে শাড়ি পরার বিষয়গুলো জেনেছি। বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের অ্যাপ তৈরিতে সম্ভাবনার ক্ষেত্র প্রচুর।’
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে বেসিস পরিচালক ও বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের আহ্বায়ক আরিফুল হাসান অপু বলেন, 'এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমাদের বিদেশে ব্র্যান্ডিংয়ের সুযোগ রয়েছে। আমাদের তরুণেরা তথ্যপ্রযুক্তিতে কতটা দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। ভবিষ্যতেও নাসার ইন্টারন্যাশনাল স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের মতো আরও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে।'

বাংলাদেশে এই প্রতিযোগিতার আয়োজক হিসেবে ছিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। এ ছাড়া সহযোগিতায় ছিল আইবিপিসি, ক্লাউডক্যামপ, বেসিস স্টুডেন্টস ফোরাম, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি) ও ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)।

বেসিসের সভাপতি শামীম আহসান বলেন, 'সম্প্রতি নাসা আয়োজিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ হ্যাকাথন প্রতিযোগিতা ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৫-এর বাংলাদেশ পর্ব শেষ হয়েছে। কয়েক ধাপে যাচাই-বাছাই শেষে গত শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পর্বে ঢাকা ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় মোট চারটি দল আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য মনোনীত হয়েছে। এ ছাড়া পিপলস চয়েস ক্যাটাগরিতে আরও দুটি দল মনোনীত হয়েছে। বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য একে আমরা বড় সুযোগ হিসেবে দেখছি।’  

ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ‘ক্লিন ওয়াটার ম্যাপিং’ বিষয়ে অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট করে প্রথম হয় ‘আইইউবি কোয়ার্কস’ ও রানার্সআপ নির্বাচিত হয় ‘যান্ত্রিক ক্লিন ওয়াটার’ দল। রবিবার ভোটিংয়ের মাধ্যমে পিপলস চয়েস ক্যাটাগরিতে আরেকটি দল নির্বাচিত হবে।

এ ছাড়া চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও রানার্সআপ দলগুলো হলো যথাক্রমে ‘টি-স্কয়ার’ ও ‘কম্বো কোডার’। এ ছাড়া পিপলস চয়েস ক্যাটাগরিতে ‘অগ্রপথিক’ দল নির্বাচিত হয়।

প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও পিপলস চয়েস ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এ ছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকলকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম খান।

আরিফুল হাসান বলেন, প্রতিযোগিতায় আর্থ, আউটার স্পেস, হিউম্যান, রোবোটিক্স ক্যাটাগরিতে ১৫০০ এর বেশি প্রতিযোগী আবেদন করেন। এরপর কয়েকটি ধাপে ঢাকার জন্য ৩৬টি ও চট্টগ্রামের জন্য মোট ১৬টি টিম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়। গত শুক্রবার ঢাকার ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি) ও চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত দলগুলো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
পাঁচজন মেন্টর প্রতিযোগীদের আইডিয়াগুলো উন্নয়নে সহায়তা করেন। শনিবার বিকেলে ১২ জন বিচারক প্রতিযোগীদের আইডিয়া ও অ্যাপসগুলো কয়েকটি ধাপে পর্যবেক্ষণ করেন। উভয় স্থানেই বিচারকদের প্রদত্ত পয়েন্টের ভিত্তিকে প্রথম, দ্বিতীয় ও পিপলস চয়েস ক্যাটাগরিতে আরেকটি দল নির্বাচন করা হয়।